জমির ই নামজারি করতে কি কি লাগে ২০২৪
জমির মালিকানা পরিবর্তন হলে, নামজারি বা খারিজ করার মাধ্যমে জমির রেকর্ড আপডেট করতে হয়। তাই অনলাইনে জমির ই নামজারি করতে কি কি লাগে জেনে নিন এখানে।
বর্তমানে ঘরে বসেই অনলাইনে জমির নামজারি/ খারিজ করা যায়। কিন্তু অনেকেই জানে না যে জমির মালিকানা পরিবর্তনের জন্য ই নামজারি করতে কি কি লাগে।
তাই ২০২৪ সালে জমির নামজারি করতে কি কি কাগজপত্র লাগে এবং কি কি কাগজপত্র অনলাইনে আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে, সেগুলোর তালিকা এই আর্টিকেলটি পড়ে জেনে নিতে পারেন।
ই নামজারি করতে কি কি লাগে ২০২৪
২০২৪ সালে ই নামজারি করতে চাইলে, আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, জমির খাজনা পরিশোধের রিসিট, জমির দলিল ও খতিয়ান, উত্তরাধিকার সনদ/ ওয়ারিশান সনদ/ বন্টন নামা ইত্যাদি কাগজপত্র লাগে।
ভূমি মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ই নামজারি করার ক্ষেত্রে এসকল কাগজপত্র কম্পিউটারে স্ক্যান করে বা ছবি তুলে অনলাইনে আবেদনের সাথে সাবমিট করতে হয়।
আরও পড়ুনঃ খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম | e Khatian Check.
অনলাইনে নামজারি করতে কি কি লাগে?
অনলাইনে জমি নামজারি করার জন্য আবেদনের সময় যে সকল কাগজপত্র আপলোড করতে হয়, সেগুলো হলো:
- আবেদনকারী ব্যক্তির NID Card/ পাসপোর্ট/ জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি।
- চলতি বছরের ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের রশিদ।
- জমির সর্বশেষ মালিকের নামের খতিয়ান।
- দলিলের ভিত্তিতে মালিক হলে, সাব কাবলা/ বন্টননামা/ হেবা দলিলের ফটোকপি।
- ওয়ারিশের ভিত্তিতে মালিক হলে, ওয়ারিশ সনদ।
- রেকর্ডীয় মালিকের মাধ্যম ব্যতিত আদালতের রায় বা ডিক্রি হলে, সেই রায় বা ডিক্রির ফটোকপি।
এছাড়াও অনলাইন আবেদনের জন্য পূর্বে আবেদনকারী ব্যক্তির পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দিতে হতো। কিন্তু বর্তমানে আর আবেদনকারীর ছবি জমা দিতে হয় না। তাই শুধুমাত্র উপরোক্ত ডকুমেন্টস গুলো আপনার কাছে থাকলেই নামজারির জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
আবেদনপত্র সাথে উল্লেখিত কাগজপত্র গুলো জমা দেওয়ার জন্য, আগে থেকেই কম্পিউটারে স্ক্যান করে/ ছবি তুলে নিতে হবে। তারপর সেই স্ক্যান কপি/ ছবির ফাইলটি jpg/ png/ pdf ফরমেটের হতে হবে।
স্ক্যান কপি/ ছবির ফাইল সাইজ অবশ্যই ২৫ মেগাবাইটের (25 MB) মধ্যে হতে হবে। ফাইল সাইজ এর বেশি হলে, সেটি আপলোড করতে পারবেন না। অনলাইনে সেই ডকুমেন্টের ফাইলটি আপলোড করার পর, ফাইলের ধরনও সিলেক্ট করে দিতে হবে। যেমন: দলিল/ ওয়ারিশ সনদ/ খাজনা রশিদ/ খতিয়ান ইত্যাদি।
জমির নামজারি করতে কি কি কাগজপত্র লাগে?
জমির নামজারি করতে যেসকল কাগজপত্র লাগে, তা ইতোমধ্যেই আপনারা জানতে পেরেছেন। এবার সে সকল কাগজপত্র গুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য তুলে ধরা হলো:
(১) আবেদনকারীর পরিচয়পত্র: যিনি নামজারি করার জন্য আবেদন করবেন, তার জাতীয় পরিচয়পত্র ফটোকপি দিতে হবে। এক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ড ছাড়াও পাসপোর্ট কিংবা জন্ম নিবন্ধন সনদের ফটোকপি দিতে পারবেন।
(২) জমির দলিলপত্র: জমি ক্রয়-বিক্রয় করে বা দলিলের মাধ্যমে জমির মালিক হলে, সেই জমির দলিল নাম্বার, দলিল রেজিস্ট্রির তারিখ ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসার নামসহ ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে।
(৩) খতিয়ানের কপি: যেহেতু একটি জমির খতিয়ানে সেই জমির মালিকের নাম, পিতা বা স্বামীর নাম এবং জমির অবস্থানের ঠিকানা উল্লেখিত থাকে, তাই জমির নামজারি করার জন্য খতিয়ানের কপি প্রয়োজন হয়।
আরও পড়ুনঃ খতিয়ান কি? খতিয়ান কত প্রকার ও কি কি?
(৪) খাজনা পরিশোধের রশিদ: চলতি বছরে উক্ত জমির ভূমি উন্নয়ন কর বা খাজনা পরিশোধের রশিদের কপি জমা দিতে হবে।
(৫) ওয়ারিশিয়ান সনদপত্র: উক্ত জমির দাতা বা পূর্বের মালিক যদি মৃত্যুবরণ করে থাকে, তাহলে সেই মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশ দের ওয়ারিশান সনদপত্র জমা দিতে হবে।
(৬) উত্তরাধিকার সনদ: উত্তরাধিকার হওয়ার ভিত্তিতে জমির মালিকানা পরিবর্তন হলে, নামজারি করার জন্য উত্তরাধিকার সনদপত্র জমা দিতে হবে।
(৭) অন্যান্য ডকুমেন্টস: উত্তর জমির রেকর্ড অনুযায়ী, জমির মালিকের মাধ্যম ছাড়া অন্য কোন মাধ্যমে আদালতের কোন রায় বা ডিক্রি হলে, সেগুলোর কপি জমা দিতে হয়। এছাড়াও ভূমি অফিসে যদি নামজারির বিষয়ে যোগাযোগ করে থাকেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অন্য কোন ডকুমেন্টস এর কথা বললে সেগুলোও প্রযোজ্য ক্ষেত্রের জমা দিতে পারেন।
এছাড়াও আবেদন ব্যক্তির একটি সচল মোবাইল নাম্বার দিতে হবে। পরবর্তীতে সেই মোবাইল নাম্বারেই নামজারির শুনানি এবং অন্যান্য বিষয়ে আপডেট জানানো হবে।
আরও পড়ুনঃ অনলাইনে বি আর এস খতিয়ান যাচাই।
ভূমি নামজারি করতে কি কি লাগে?
ভূমি নামজারি করতে,
- NID Card/ জন্ম নিবন্ধন/ পাসপোর্ট;
- জমির দলিলপত্রের কপি;
- জমির খতিয়ানের কপি;
- কর পরিশোধের রিসিট;
- প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ওয়ারিশ সনদ;
- প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উত্তরাধিকার সনদপত্র;
- এবং একটি মোবাইল নাম্বার লাগে।
আরও পড়ুনঃ অনলাইনে আর এস খতিয়ান অনুসন্ধান করার নিয়ম।
শেষকথা
উপরোক্ত আলোচনা থেকে জানতে পারলেন – অনলাইনে জমির ই নামজারি করতে কি কি লাগে। এসকল ডকুমেন্টগুলোর স্ক্যান কপি জমা দিয়ে আপনি নিজেই নিজেই জমির ই নামজারি বা খারিজের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
FAQ’s
বর্তমানে অনলাইনে নামজারি করতে টোটাল ১,১৭০ বা ১ হাজার ১ শত ৭০ টাকা খরচ হয়।
জমি খারিজের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তির এনআইডি কার্ডের কপি কিংবা জন্ম সনদের কপি, উক্ত জমির দলিলের কপি, উক্ত জমির খতিয়ানের কপি, জমির খাজনা পরিশোধের রশিদ এবং উত্তরাধিকার বা ওয়ারিশন সনদপত্র ইত্যাদি কাগজপত্র লাগে।